এক্স-সিটু সংরক্ষণ | এক্স-সিটু সংরক্ষণের বৈশিষ্ট্য | এক্স-সিটু সংরক্ষণ পদ্ধতি |

এক্স-সিটু সংরক্ষণ:- 

    লুপ্তপ্রায় বা সংকটময় জীব বৈচিত্র্যকে তাদের নিজ স্বাভাবিক বাসস্থানের বাইরে অন্য কোন অনুকূল পরিবেশে সংরক্ষণ করাকে এক্স-সিটু সংরক্ষণ বলে।

            "Ex-situ Reservation is the - Process of protecting and endangered plant or animal species outside of its natural habitat"

এক্স-সিটু সংরক্ষণ
এক্স-সিটু সংরক্ষণ


·        এক্স-সিটু সংরক্ষণের বৈশিষ্ট্য-

• এই সংরক্ষণে লুপ্তপ্রায় প্রজাতির সংরক্ষণ গুরুত্ব পায়।

• বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে লুপ্তপ্রায় প্রজাতির সংখ্যা বাড়ানো হয়।

 এক্ষেত্রে প্রজাতির স্বাভাবিক বিবর্তন ঘটে না।

• এই সংরক্ষণ দ্বারা অসংখ্য প্রজাতি সংরক্ষণ হলেও তাদের মধ্যে খাদ্যশৃঙ্খল গড়ে ওঠে না।

• এই সংরক্ষণে শিক্ষা ও গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হয়।

 কৃত্রিম উপায়ে জিন, বীজ, শুক্রাণু সংরক্ষিত হয়।

 অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র অঞ্চলে কৃত্রিমভাবে তৈরি পরিবেশে এই সংরক্ষণ পদ্ধতি গড়ে তোলা হয়।

·       এক্স-সিটু সংরক্ষণ পদ্ধতি-

a. বোটানিক্যাল গার্ডেন বা উদ্ভিদ উদ্যান-  একটি উদ্ভিদ উদ্যান হচ্ছে কঠোরভাবে সংরক্ষিত একটি গ্রামীণ সবুজ এলাকা, যেখানে একদল কর্মী বাগান রক্ষণাবেক্ষণ করে, জীবন্ত ও সংরক্ষিত উদ্ভিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে, গবেষণা ও অধ্যয়ন, প্রদর্শন ও মানবকল্যাণের জন্য এসব উদ্ভিদের বংশগতির কার্যকরী একক সংরক্ষণ করে। উদ্ভিদ উদ্যান হতে পারে একটি স্বাধীন সংস্থা, একটি সরকারি প্রকল্প, অথবা কোন কলেজ কিংবা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী সংস্থা। বিশ্বজুড়ে প্রায় 1800 টি উদ্ভিদ উদ্যান আছে। ভারতে প্রায় 36 টি বোটানিক্যাল গার্ডেন বা উদ্ভিদ উদ্যান আছে।       

• বিভিন্ন গাছ সংরক্ষণের ব্যবস্থা হল বোটানিক্যাল গার্ডেন ও                     বায়োলজিক্যাল পার্ক।

• এখানে লুপ্তপ্রায় গাছগুলিকে বেশি নজর দেওয়া হয়।

 বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির উদ্ভিদকে কৃত্রিম প্রজনন দ্বারা সংরক্ষণ করা         হয়।            

• সারাবিশ্বে 1600 উদ্ভিদ উদ্যানে 80,000 বিপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির, 80 লক্ষ উদ্ভিদ সংরক্ষণ করা হয়।

·        উদাহরণ -

i. পৃথিবীর বৃহত্তম বোটানিক্যাল গার্ডেন হল- ইংল্যান্ডের "দি রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেন"(1759)।

ii. এশিয়ার তথা ভারতের বৃহত্তম বোটানিক্যাল গার্ডেন হল- শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন (আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু)।

b. চিড়িয়াখানা- যেখানে বন্য প্রাণী বন্দী অবস্থায় সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য রাখা হয় তাকে চিড়িয়াখানা বলে।

• ডিম সংগ্রহ, আবদ্ধ প্রজনন, কৃত্রিম নিষেক, ক্লোনিং দ্বারা বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির প্রাণীর বাচ্ছা তৈরি।

• নবজাতক বাচ্চাগুলোকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজ বন্য পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া।

• বিরল প্রজাতির প্রাণীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি।

• বিপন্ন প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও মানুষের দৃষ্টি নন্দনীয় বিনোদন।

উদাহরণ- ভারতের বৃহত্তম চিড়িয়াখানা কলকাতার আলিপুর।

c. জিন ব্যাংক- বিজ্ঞানসম্মতভাবে বীজ, শুক্রাণু সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং টিস্যু কালচারের ব্যবস্থা হল জিন ব্যাংক।

 জীব দেহের বিভিন্ন অংশকে জিন ভান্ডরে রেখে বিপন্ন জীবপ্রজাতির জন্মগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ।

• উদ্ভিদের ক্ষেত্রে বীজ,পরাগরেণু,কন্দো, DNA, RNA, বিশেষ বিশেষ দেহ কলাকে হিমায়িত ও শুষ্ক পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয়।

উদাহরণ-

• সারাবিশ্বে 60,000 শস্য প্রজাতির একটি জিন ভান্ডার গড়ে উঠেছে।

• ভারত - মার্কিন প্রকল্পের অধীনে 1988 খ্রিস্টাব্দে ভারতে একটি জিন ভান্ডার গড়ে উঠেছে।

 ভারতে National Bureau of Plant Genetic Resource (NBPGR) -উদ্ভিদ কলা গবেষণাগার।

d. ক্রায়ো সংরক্ষণ- পরাগরেণু, বীজ, গাছের অংশকে (-96 ডিগ্রী সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় তরল হাইড্রোজেন সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে ক্রায়ো সংরক্ষণ বলে।

e. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং- জীবের জিনগত পরিমাণের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে আরো বেশি মনুষ্য কল্যাণকর কাজে লাগানোর প্রযুক্তিগত পদ্ধতি। এক্ষেত্রে DNA সংযোজন ও জিন ছেদন করা হয়।

 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Random Products