ভৌম জল (Ground Water) | ভৌমজলের উৎস বা শ্রেণীবিভাগ | প্রস্রবণ বা Spring | প্রস্রবণ এর শ্রেণীবিভাগ

ভৌমজল (Ground Water) কাকে বলে? ভৌমজলের উৎস বা শ্রেণীবিভাগ। ভৌমজলের নিয়ন্ত্রক। অ্যাকুইক্লুড (Aquiclude) । অ্যকুইফিউজ (Aquifuge) । অ্যকুইটার্ড (Aquitard) । অ্যকুইডাক্ট (Aquiduct)। প্রস্রবণ বা Spring কাকে বলে? ইহার শ্রেণীবিভাগ করো। ভৌম জল স্তর কাকে বলে? ইহার শ্রেণীবিভাগ কর। ভাঁজযুক্ত শিলায় আর্টেজীয় প্রস্রবণ দেখা যায় কেন? অথবা পাম্প ছাড়া আর্টেজীয় কূপে জল উঠে আসে কেন ?



ভৌম জল (Ground Water)
ভৌম জল (Ground Water)

ভৌম জল (Ground Water) সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিস্তারিত


  • ভৌমজল (Ground Water) কাকে বলে? 


ভূপৃষ্ঠ ও ভূ-অভ্যন্তরের অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মধ্যবর্তী প্রবেশ্য শিলাস্তরের মৃত্তিকা ও মৃত্তিকা রন্ধ্র পরিসরে যে জল  সঞ্চিত আছে, তাহাই ভৌমজল।

           অর্থাৎ ভূগর্ভের মাটি, রেগোলিথ কিংবা শিলারন্ধ্রে যে জল অবস্থান করে তাহাই ভূ-জল বা ভৌম জল। 

            A.N Strahlar -এর মতে- "Ground water is that part of sub surface water which fully saturated the pore spaces of the rock and beheaves in responce to gravitational force".

      R.M lodha এর মতে- "ভূপৃষ্ঠের নীচে এবং ভূ-অভ্যন্তরে অপ্রবেশ্য পদার্থ দ্বারা গঠিত স্তরের  উপর মাটি ও শিলারন্ধ্রের স্থানগুলিতে যে জল অধিকার করে থাকে তাকে ভৌমজল বলে। 

          GW=P - (SW+E+T+SR+LS)

 যেখানে, GW= Ground water

               P= Presipitation

               SW=Soil Water

               ET=Evapa Transpiration

              SR=Surface run off

              LS=Lack stors

            R.M Lodha- "Water that occupies pores and soil below the surface and above the layer of impermeable is called groundwater".

       Picture


  • ভৌমজলের উৎস বা শ্রেণীবিভাগ


1. মিটিওরিক জল, 2. সহজাত জল, 3. উদস্যন্দ জল


  •  মিটিওরিক জল - নানান অধঃক্ষেপণ, তুষার ও হিমবাহ গলা জল নদী-নালা, হ্রদ প্রভৃতি জলরাশি থেকে চুঁইয়ে ও অনুস্রাবণ প্রক্রিয়ায় ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে আবহিক জল সৃষ্টি করে। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে 3000 ফুট গভীর পর্যন্ত সঞ্চিত হয়। 

  • সহজাত জল- পাললিক শিলা গঠনের সময় সমুদ্র বা হ্রদের কিছু জল অনেক সময় পাললিক শিলার মধ্যে থেকে যায়। ইহা সহজাত জল।

  • উদস্যন্দ জল-  বিজ্ঞানী সুয়েস 1902 খ্রিস্টাব্দে বলেন অগ্ন্যুদগমের  সময় কিছু খনিজ মিশ্রিত উত্তপ্ত জল নির্গত হয়। যা পরে ভৌমজল রূপে সঞ্চিত হয়।(উৎ= উত্থান, স্যন্ধ  = ক্ষরণ )। উৎস্যন্দ জল অতি গভীরে সৃষ্টি হলে তাকে ক্লুটিনিক জল এবং স্বল্প গভীরে সৃষ্টি হলে তাকে ম্যাগমাজাত জল বলে।


  • ভৌমজলের নিয়ন্ত্রক :


যেসকল প্রাকৃতিক অবস্থা ভূ-গর্ভের ভৌম জলের অনুস্রাবণ, প্রবাহ ও সঞ্চয়কে নিয়ন্ত্রণ করে তাদেরকে ভৌম জলের নিয়ন্ত্রক বলে। ইহারা হল-

  1.  অধঃক্ষেপণ এর পরিমাণ- অধঃক্ষেপণ এর পরিমাণ ভৌম জলের পরিমাণ কে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন- (ক). দৈনিক বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে ভৌম জলের পরিমাণ বাড়বে।( নিরক্ষীয় অঞ্চলে) (খ). দৈনিক কম বৃষ্টিপাতে হ্রাস পায়।( ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিম অংশে)।

  2. অধঃক্ষেণের  স্থায়িত্ব- কত সময় ধরে অধঃক্ষেপণ হয় তার নিশ্চয়তার উপর ভৌম জল সঞ্চয় নির্ভরশীল।  

  3. তুষার গলা জল- তুষার গলা জলের সরবরাহ বাড়লে সঞ্চয় বাড়ে, অন্যথায় কমে। 

  4. ভূমির ঢাল- ভূমির ঢাল বাড়লে বৃষ্টির জল দ্রুত গড়িয়ে যায়। শিলাস্তরের প্রবেশের সুযোগ কম পায়। ভূমির ঢাল কমলে বৃষ্টির জল মৃত্তিকা ও শিলাস্তরে প্রবেশের সুযোগ পায় এবং ভৌম জলের সঞ্চয় বাড়ে। 

  5. শিলার সছিদ্রতা- মাটি ও শিলা বিভিন্ন আয়তনের কণায় গঠিত, তাদের মধ্যে ফাক বা  রন্ধ্র থাকে। এই রন্ধ্র বা ছিদ্র থাকার বৈশিষ্ট্য হল সছিদ্রতা। (ক) শিলার সছিদ্রতা বাড়লে জলের অনুপ্রবেশ বাড়ে (বেলে মাটি)। (খ) মাটি বা শিলার সছিদ্রতা কমলে জলের অনুপ্রবেশ কমে।( এঁটেল মাটি, গ্রানাইট শিলা)।

  6.  প্রবেশ্যতা- শিলা বা মাটির মধ্যে তরলের (জল) পরিবাহিতা হল প্রবেশ্যতা। ইহা সছিদ্রতার উপর নির্ভরশীল। শিলার প্রবেশ্যতা বাড়লে ভৌমজল সঞ্চয় বাড়ে (বেলে পাথর, বালি মাটি)। শিলার প্রবেশ্যতা কমলে ভৌম জল সঞ্চয় কমে (কাদা পাথর, এঁটেল মাটি)। 

  7.  প্রবেশ্য শিলার নীচে অপ্রবেশ্য শিলা- প্রবেশ্য শিলার নীচে অপ্রবেশ্য শিলা থাকলে প্রবেশ্য শিলা দিয়ে প্রবেশিত জল  অপ্রবেশ্য শিলার উপর সঞ্চিত হয়। প্রবেশ্য শিলায় জল ধরে রাখার এই অবস্থাকে অ্যাকুইফার বলে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠের ঠিক নিম্নে অপ্রবেশ্য শিলা থাকলে ভৌমজল সঞ্চয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

  8.   জৈব পদার্থ- জৈব পদার্থ সমন্বিত মৃত্তিকা স্পঞ্জের নয় বেশি সছিদ্র হওয়ায় ভৌম জলের শোষণ ও সঞ্চয় বাড়ে, অন্যথায় কমে।

  9.  উদ্ভিদের অবস্থান- (ক) উদ্ভিদ আধিক্যে জলের ভূপৃষ্ঠ প্রবাহ (SR) বাধা পায়, ভৌম জলের সঞ্চয় কমে। (খ) উদ্ভিদের প্রাধান্যে মৃত্তিকায় জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ে । (গ) উদ্ভিদ বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে।

  10.  ভূমি ব্যবহারের প্রকৃতি- (ক) ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ কর্ষণ দ্বারা উন্মুক্ত হলে ভৌমজল সঞ্চয় বাড়ে। (খ) শহরাঞ্চলে গৃহনির্মাণ,কংক্রিটের রাস্তার জন্য জলের অনুপ্রবেশ কমে।

  11.  মাটির বায়ু সঞ্চালন- মাটির ছিদ্রপথে থাকা আবদ্ধ বায়ু দ্বারা জলের নিম্ন বায়ুপ্রবাহ ও ভৌমজল সঞ্চয়ের পরিমাণ হ্রাস পায়। 

  12.  বাষ্পীভবন- (ক) বাষ্পীভবন > বৃষ্টিপাত= কম জল অনুপ্রবেশ = কম ভৌম জল (খ) বাষ্পীভবন < বৃষ্টিপাত = বেশি জল অনুপ্রবেশ = বেশি ভৌমজল সঞ্চয়


  •  অ্যাকুইক্লুড (Aquiclude) কি?


Aquiclude ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ "Water close" বা "Shut"।

ভূ-অভ্যন্তরের যে সছিদ্র শিলাস্তর জলধারণে সক্ষম কিন্তু জল সরবরাহ করতে অক্ষম তাকে অ্যাকুইক্লু্ড বলে। যেমন- শেল ও বিশেষ ধরনের কাদা পাথরের স্তর। 


  • .অ্যকুইফিউজ (Aquifuge) কি? 


ভূ-অভ্যন্তরের যেসকল ছিদ্র বিহীন অপ্রবেশ্য শিলাস্তর থাকে যার দ্বারা জলশোষণ, সরবরাহ বা প্রবাহ কোনোটিই সম্ভব নয় এটি জল বিচ্ছিন্নকারী স্তর। যেমন- গ্রানাইট ও ব্যাসল্ট শিলাস্তর। 


  • অ্যকুইটার্ড (Aquitard) কি ?


যে শিলাস্তর বা ভূতাত্ত্বিক গঠন প্রকৃতিগতভাবে অপ্রবেশ্য হলেও খুব কম পরিমাণে জল সঞ্চয় ও ক্ষরণে সক্ষম তাকে অ্যাকুইটার্ড বলে। যেমন- বেলে- কর্দম মৃত্তিকা ।


  •  অ্যকুইডাক্ট (Aquiduct) কি? 


ভূগর্ভের জল সঞ্চার বা ভূগর্ভের জল নিষ্কাশনের  জন্য তৈরি কৃত্রিম পথকে অ্যকুইডাক্ট বলে।


  • অ্যকুইফার বা জলবাহীস্তর কী? এর শ্রেণীবিভাগ দেখাও।


  • অ্যকুইফার - ল্যাটিন শব্দ "Aqua"বা "Aqui" শব্দের অর্থ জল এবং"Fer" বা "Ferre"শব্দের অর্থ "I bear"বা আমি ধারণ করি- শব্দদুটি থেকে Aquifer শব্দটি সৃষ্ট।  


                  যে শিলাস্তর ও মৃত্তিকা স্তরে উপযুক্ত সছিদ্রতার দরুন ভৌম জল সঞ্চিত হয় ও সহজে আহরণ করা যায় সেই মৃত্তিকা স্তরকে অ্যকুইফার বা জলবাহী স্তর বলে।


                 ভূপৃষ্ঠের কোন প্রবেশ্য শিলার নীচে অপ্রবেশ্য শিলাস্তর থাকলে প্রবেশ্য শিলাস্তরের মধ্য দিয়ে জল প্রবেশ করে অপ্রবেশ্য শিলাস্তরে এলে জলের নিম্ন গতি বন্ধ হয় ও প্রবেশ্য শিলাস্তর জল ধরে রাখে। প্রবেশ্য শিলার এই জল ধরে রাখার অবস্থাকে অ্যকুইফার বলে। 

Picture


  • অ্যাকুইফার এর শ্রেণীবিভাগ:


 শিলাস্তরের অবস্থানের ভিত্তিতে অ্যকুইফার 6 ধরনের হয়- 


1. আবদ্ধ অ্যাকুইফার (Confind বা Artesian Aquifer)- ভূপৃষ্ঠের ঠিক নিম্নেই দুটি অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মাঝে একটি প্রবেশ্য শিলাস্তর অধোভঙ্গের বা ধনুকের মত বেকে ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত থাকলে ওই উন্মুক্ত প্রান্ত থেকে জল ভূপৃষ্ঠে প্রবেশ করলে প্রবেশ্য শিলাস্তরটি জল ধরে রেখে যে অ্যাকুইফার সৃষ্টি করে তাহাই হলো আবদ্ধ অ্যাকুইফার। এখানে সঞ্চিত জল প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকে। এই চাপযুক্ত অবস্থায় জলের উচ্চসীমা রেখাকে পিজমেট্রিক পৃষ্ঠ বলে। এই অ্যাকুইফারের জলপীঠ অপ্রবেশ্য শিলাস্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 


2. মুক্ত অ্যাকুইফার (Open বা  Water table বা unconfind)- ভূপৃষ্ঠের ঠিক নিম্নেই যদি প্রবেশ্য শিলাস্তর অবস্থান করে তবে ওই শিলা স্তর দিয়ে প্রবাহিত জল উহার নিম্নে অপ্রবেশ্য শিলাস্তরে এলে গতি বন্ধ হয়ে যায় ।তাই প্রবেশ্য শিলাস্তর জল ধরে রাখে। একেই মুক্ত অ্যাকুইফার বা ফ্রিয়েটিভ অ্যাকুইফার বলে। এর জলস্তর স্বাধীনভাবে ওঠানামা করে। 


3. স্থানীয় বা Pergched Aquifer- অনেক সময় মুক্ত অ্যাকুইফারের ভৌম জলপীঠের উপর স্তরে অবস্থিত প্রবেশ্য জলস্তরের মধ্যে চামচের মতো অধোভঙ্গের আকারে অবস্থিত অধোভঙ্গ অপ্রবেশ্য স্তর ভৌমজল সঞ্চয় করতে পারে। একে উচ্চাসীন বা স্থানীয় অ্যাকুইফার বলে। 


4. ছিদ্রযুক্ত অ্যাকুইফার (Lekey বা cemi confind)- আবদ্ধ অ্যাকুইফারের উপর বা নীচের স্তর অ্যাকুইক্লুড  বা অ্যকুইটার্ড দ্বারা গঠিত হলে অতি ধীরে জল অ্যাকুইফারে  সঞ্চিত হয়। ইহা ছিদ্রযুক্ত অ্যাকুইফার। 


5. আদর্শ অ্যাকুইফার- যে অ্যাকুইফারের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, গভীরতা মানানসই এবং এতে থাকা ভৌম জলের প্রকৃতি, প্রবাহ ও সঞ্চয় সমধর্মী। তাহাই আদর্শ অ্যাকুইফার। 


6. সম্পূর্ণ আবদ্ধ অ্যাকুইফার (Bounded Aquifer)- যখন স্বল্পপরিসর স্থানে অবস্থিত কোনো অ্যাকুইফারের একদিকে অ্যকুইটার্ড ও বাকি তিন দিকে অ্যকুইফিউজ ও অ্যাকুইক্লুড থাকে, তাকে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অ্যাকুইফার বলে। একদিকে মাত্র অ্যকুইটার্ড থাকায় অতি ধীর গতিতে জল প্রবেশ করে অ্যকুইফার জলপূর্ণ হয়।



  • প্রস্রবণ বা Spring কাকে বলে? ইহার শ্রেণীবিভাগ করো।


প্রস্রবণ বা  Spring- সাধারণভাবে ভূপৃষ্ঠের কোন ছিদ্র দিয়ে ভৌমজলের স্বাভাবিক নির্গমনকে প্রস্রবণ বলে।


              বিজ্ঞানী F.J Monkhouse এর মতে- "A spring is a natural out flow of water from the surface of the ground".


              C.S Pichamuthu এর মতে- "The terms spring is applied to subsurface water which gushes out from the ground".


            ভৌম জল শরীর থেকে ঘাম নিঃসরণ এর মত অতি ধীরে ধীরে নির্গত হলে, তাকে ক্ষরণ বলে (Seepage)।


  • প্রস্রবণ এর শ্রেণীবিভাগ 


1. অবিরাম প্রস্রবণ 2. সবিরাম প্রস্রবণ 3. শীতল প্রস্রবণ 4. উষ্ণ প্রস্রবণ 5. খনিজ প্রস্রবণ 5. খনিজ প্রস্রবণ 7. চ্যুতি প্রস্রবণ 8.বিদার বা দারণ প্রস্রবণ 9. আরটেজীয় কূপ 10. ভ্যাক্লুশন প্রস্রবণ 11. প্রস্রবণ রেখা 12. ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ 13. নতি ঢাল প্রস্রবণ



  •  বিভিন্ন প্রকার প্রস্রবণ এর উদাহরণ দাও।  


1. অবিরাম প্রস্রবণ:

 উদাহরণ- শোন নদীর উৎস সোনামুড়া প্রস্রবণ।

2. সবিরাম প্রস্রবণ:

 উদাহরণ- ঝাড়খণ্ডের লুপুঙবুটু প্রস্রবণ।

3. শীতল প্রস্রবণ (4 ডিগ্রী C কাছাকাছি):

উদাহরণ-a. উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের সহস্রধারা। b.শুশুনিয়া ও উত্তরাঞ্চলের মুসৌরি প্রস্রবণ। 

4. উষ্ণ প্রস্রবণ (5 ডিগ্রী C বেশি):

উদাহরণ - 

a .পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের বক্রেশ্বর (53- 72 ডিগ্রী C)

b. ঝাড়খণ্ডের রাজগির।

c. বিহারের সীতাকুন্ডু।

d. হিমাচল প্রদেশের তাতাপানি।

e. ওড়িশার বেরহামপুর।

f. হিমাচল প্রদেশের মুণিকরণ। 

5. খনিজ প্রস্রবণ :

উদাহরণ - 

a. ভারতের রাজগির ও বক্রেশ্বর। 

b. ইংল্যান্ডের চেলটেনহাম স্পা।

c. উত্তরাখণ্ডের সহস্রধারা। 

6. গিজার প্রস্রবণ:

উদাহরন- 

a. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলোস্টোন পার্কের ওল্ড ফেইথফুল ।

b. আইসল্যান্ডের গিজির ও স্ট্রোক্কুর।  

c. নিউজিল্যান্ডের লেডিনস্ক।

d. Vally of Geysers বলা হয় রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপকে।

7. চ্যুতি প্রস্রবণ :

উদাহরণ- হিমাচল প্রদেশের মনিকরণ।

8. বিদার বা দারণ প্রস্রবণ :

উদাহরণ -অমরকন্টক এর সোনামুড়া প্রস্রবণ। 

9. আরটেজীয় কূপ :

উদাহরণ- a.1750 খ্রিস্টাব্দে উত্তর পূর্ব ফ্রান্সের আটোয়া নামক স্থানে প্রথম এই কূপ খনন করা হয়। 

b. গুজরাটের আমেদাবাদে বীরগাঁও(232 মিটার/776 ফুট)।

c. তামিলনাড়ুর কাড্ডালোর।

d. উড়িষ্যার বালেশ্বর।

e. অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি আর্টেজীয় কূপ দেখা যায় (9000)।

d. গ্রেট আর্টেজীয় বেসিন অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম কূপ। 

10.ভ্যাক্লুশন প্রস্রবণ :

উদাহরণ- দক্ষিণ ফ্রান্সের নিম্ন রোন উপত্যকার "ফনটেন ড্য ভ্যক্লুশ" থেকে এই প্রস্রবণ এর নামকরণ।

11. প্রস্রবণ রেখা :

উদাহরণ- 

a. উত্তরাঞ্চলের কুমায়ুণ হিমালয় এর পাদদেশ অঞ্চল।

b. ঝাড়খণ্ডের ছোটনাগপুর মালভূমিতে। 

c. মহারাষ্ট্রের পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম অংশের কোঙ্কণ উপকূলে।

12. ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ:

উদাহরণ- দেরাদুনের সহস্রধারা।

13. নতি ঢাল প্রস্রবণ :

উদাহরণ - ঝাড়খন্ডের  চাইবাসার লুপু্ংবুটু।


  • প্রস্রবণ এর শ্রেণীবিভাগ বর্ণনা করো। 


A .স্থায়িত্বের ভিত্তিতে:


1.  অবিরাম প্রস্রবণ- যে প্রস্রবণ থেকে জল সারাবছর নিয়মিতভাবে নির্গত হয় তাহাই অবিরাম প্রস্রবণ। সম্পৃক্ত স্তর বেশি বিস্তৃত হলে স্থায়ী প্রস্রবনের সৃষ্টি হয়।

 যেমন - শোন নদীর সোনামুড়া প্রস্রবণ।


2.  সবিরাম প্রস্রবণ- যে প্রস্রবণ থেকে সারা বছর জল নির্গত  হয় না।বর্ষায় কেবলমাত্র জল নির্গত হয়। শুষ্ক ঋতুতে হয় না তাহাই সবিরাম প্রস্রবণ। এর ছিদ্রপথ সবিরাম সম্পৃক্ত স্তরে  যুক্ত থাকে। 

যেমন- ঝাড়খণ্ডের লুপুংগুডু প্রস্রবণ। 


B. উষ্ণতার ভিত্তিতে:


1. শীতল প্রস্রবণ- যে প্রস্রবনের নির্গত জলের উষ্ণতা ভূপৃষ্ঠীয় জল অপেক্ষা কম (4ডিগ্রীC

কাছাকাছি) তাহাই শীতল প্রস্রবণ।

 যেমন- দেরাদুনের সহস্রধারা, মুসৌরির প্রস্রবণ। 


2. উষ্ণ প্রস্রবণ- প্রস্রবণের নির্গত জলের উষ্ণতা ভূপৃষ্ঠের জল অপেক্ষা অনেক বেশি অর্থাৎ 5ডিগ্রীC এর অধিক হলে তাহা উষ্ণ প্রস্রবণ। যেমন -পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বর(53- 72 ডিগ্রী C), ঝাড়খণ্ডের রাজগির, সিমলার তাতাপানি (তাতা= উষ্ণ, পানি= জল) 


3. গিজার প্রস্রবণ- Geyser শব্দটি আইসল্যান্ডের Great Geyser উষ্ণ প্রস্রবণ এর নামানুসারে এসেছে(Geyser=to gush)

               যে উষ্ণ প্রস্রবনের জল ও বাষ্প নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর( কয়েক মিনিট বা ঘন্টা) স্তম্ভাকারে, বহু ঊর্ধ্বে প্রবল বেগে উৎক্ষিপ্ত হয় তাহাই গিজার। নবীন আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে অধিক মাত্রায় দেখা যায়। উদাহরণ -আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলোস্টোন পার্কের ওল্ড ফেইথফুল গিজার। এতে- এক ঘন্টা অন্তর, 5 মিনিট স্থায়িত্বযুক্ত, 60 মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট, জলীয়বাষ্প সহ, 1 মিলিয়ন গ্যালন , 95 ডিগ্রী সেলসিয়াস উষ্ণতাযুক্ত জল উৎক্ষিপ্ত হয়। 


C. জলের উপাদানের ভিত্তিতে: 


1.স্বাদু জলের প্রস্রবণ- যে প্রস্রবণে জলে দ্রাব্য  খনিজ পদার্থের পরিমাণ 1 গ্রাম/ লিটার বা তার কম থাকে তাহাই স্বাদু জলের প্রস্রবণ।

 যেমন- দেরাদুনের সহস্রধারা। 


2. খনিজ প্রস্রবণ- যে প্রস্রবণে জলে দ্রাব্য খনিজ পদার্থের পরিমাণ 1 গ্রাম/ লিটার বা তার বেশি থাকে তাহাই খনিজ প্রস্রবণ।

 যেমন - ইংল্যান্ডের স্পা, বিহারের রাজগির।


D. ভূত্বকের গঠন ও শিলার প্রকৃতি অনুসারে

 

ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানের শিলার গঠন ও প্রকৃতির মধ্যে বিভিন্নতার জন্য শিলার গঠন ও প্রকৃতি অনুসারে নানান প্রস্রবণ গঠিত হয়। যেমন-

 

1. চ্যুতি প্রস্রবণ- চ্যুতির ফলে যদি প্রবেশ্য শিলাস্তর অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের উপর উঠে আসে তখন দুই ভিন্ন স্তরের সংযোগস্থল উন্মুক্ত হয়ে চ্যুতি প্রস্রবণ সৃষ্টি করে। 


2. ডাইক প্রস্রবণ- কোনো ডাইক বা শিলাস্তরের লাভার উলম্ব সঞ্চয় যখন কোনো প্রবেশ্য শিলাস্তর ভেদ করে ওপরে ওঠে তখন তাদের সংযোগস্থলে সৃষ্ট প্রস্রবণ হল ডাইক প্রস্রবণ। 


3. সমান্তরাল প্রস্রবণ- সমান্তরাল প্রবেশ্য শিলাস্তর ও সমান্তরাল অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মিলনস্থল এর মধ্য দিয়ে যে জল নির্গত হয়, তাহাই সমান্তরাল প্রস্রবণ।


4. ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ- চুনাপাথর বা চক দিয়ে গঠিত ভৃগুতটের পাদদেশে প্রবেশ্য (বেলেপাথর, চুনাপাথর) ও অপ্রবেশ্য (কাদা পাথর) শিলার সংযোগস্থল দিয়ে নির্গত প্রস্রবণ হলো ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ। 


5. নতি ঢাল প্রস্রবণ- প্রবেশ্য ও অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের সংযোগস্থল কোনো নতি ঢালে উন্মুক্ত হলে যে প্রস্রবণ সৃষ্টি হয় তাহাই নতি ঢাল প্রস্রবণ।


6. ভ্যাক্লুশান প্রস্রবণ- ফ্রান্সের রোন নদীর উপত্যকার ফনটেন দা ভ্যক্লুশ নামক প্রস্রবণ থেকে এর নামকরণ‌। চুনাপাথর অঞ্চলের ভৌম জল ভূগর্ভ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কোনো ফাটল এর মধ্য দিয়ে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এসে এই প্রস্রবণ সৃষ্টি করে।


7. আর্টেজীয় প্রস্রবণ- - দুটি অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মধ্যে একটি প্রবেশ্য শিলা অধঃভঙ্গের আকারে থাকলে ও প্রবেশ্য শিলার দুই প্রান্ত ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত থাকলে বৃষ্টির জল প্রবেশ্য শিলা দিয়ে প্রবেশ করে, ভৌম জলের সঞ্চয় বাড়ায়। কিন্তু উহার উপর ও নীচে  অপ্রবেশ্য শিলাস্তর থাকায় জল উপর ও নীচে বেরিয়ে যেতে পারে না। ফলে প্রবেশ্য শিলাস্তরে ভৌম জলের চাপ বাড়ে। এই অবস্থায় উপরের অপ্রবেশ্য শিলাস্তর দিয়ে প্রবেশ্য শিলাস্তর পর্যন্ত 

কূপ খনন করলে "প্রবেশ্য শিলাস্তরের দুই প্রান্তে বৃষ্টিপাত হলে" বিনা পাম্পে কূপ হতে সারা বছর জল নির্গত হয়। একে আর্টেজীয় কূপ বলে। 1750 খ্রিস্টাব্দ ফ্রান্সের Artois নামক স্থানে ইহা প্রথম খনন করা হয়।

 উদাহরণ- ভারতের আমেদাবাদের বীরগাঁও-এ 232 মিটার (776 ফুট) গভীর এই ভূমিরূপ রয়েছে। 



  •  ভৌমজল সংবহন (Down water Circulation) কাকে বলে? ইহা কী কী প্রক্রিয়ায় হয় ?


ভৌমজল সংবহন- পরিপূরণ (Recharge),ক্ষরণ(Discharge) ও বিচলনের(Movement) মাধ্যমে ভৌমজলের চলাচলকে ভৌমজল সংবহন বলে।


  •  প্রক্রিয়া - ইহা তিনটি প্রক্রিয়ায় সংবহন হয় -


1. পরিপূরণ- ভূপৃষ্ঠের জল অভিকর্ষের টানে বায়বীয় স্তর দিয়ে সম্পৃক্ত স্তরে পৌঁছালে Recharge বলে। ইহা কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক দু ভাবে হয়। 

2. নিঃসরণ- চ্যুতি, ফাটল, দারণ ছিদ্রপথ দিয়ে ভৌমজল বেরিয়ে আসাকে নিঃসরণ বলে। ইহা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উপায়ে হয়। প্রাকৃতিক নিঃসরণ পথ হল প্রস্রবণ, আর্টেজীয় কূপ। কৃত্রিম নিঃসরণ পথ হল কূপ ও নলকূপ। 

3. বিচরণ- ভূ-অভ্যন্তরের প্রবেশ্য স্তর দিয়ে জলের ধীরগতিতে স্থানান্তর হল বিচরণ। ইহা উলম্ব ও অনুভূমিক দুই-ই হতে পারে।




  • ভৌম জল স্তর কাকে বলে? ইহার শ্রেণীবিভাগ কর।


ভৌম জলস্তর বা ভৌম জলপিঠ (Ground water table)- বৃষ্টির জল বা বরফ গলা জল ভূ- অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের উপর প্রবেশ্য শিলাস্তরে (অ্যাকুইফার) সঞ্চিত হয়ে আঞ্চলিক যে ভৌমজলের আধার গড়ে ওঠে তার পৃষ্ঠদেশকে ভৌমজলতল বলে। অর্থাৎ ভৌমজলের উপর পৃষ্ঠ বা উপর সীমা বরাবর যে রেখা পাওয়া যায় তাহাই ভৌমজলস্তর।


 শ্রেণীবিভাগ 

A. ভাডোস জলস্তর- 1.মৃত্তিকা জলস্তর, 2. মধ্যবর্তী ভাডোস স্তর, 3. কৈশিক স্তর, 

B. ক্রিয়েটিভ স্তর বা সম্পৃক্ত স্তর-  1. সাময়িক বা সবিরাম সম্পৃক্ত স্তর, 2. স্থায়ী বা অবিরাম সম্পৃক্ত স্তর, 



A. ভাডোস জলস্তর-

সম্পৃক্ত জলস্তরের উর্ধ্বসীমা থেকে ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত যে অগভীর স্তরে অস্থায়ীভাবে ভৌম জল অবস্থান করে কিন্তু জল জমতে পারে না, জল ধারণ ক্ষমতা থাকে না, সম্পৃক্ত হয় না। তাকে ভাডোস জলস্তর বলে। এই স্তরে শিলা ও মাটির ছিদ্রগুলি বায়ুপূর্ণ থাকায় একে বাতায়ন স্তর বলে। এই স্তরের অসংখ্য ছিদ্র ও ফাটল দিয়ে অভিকর্ষজ টানে অতি ধীরে, দিনে 2- 3 মিটার হারে নিম্নগামী হয় ও সম্পৃক্ত স্তরে পৌছায়, এই স্তরকে তাই ভাডোস স্তর বলে। এই স্তরের এই নিম্নগামী জলকে ভাডোস জল বলে। এই স্তর তিন প্রকার -

1. মৃত্তিকা জলস্তর- ভূপৃষ্ঠ থেকে গভীরে যে অংশ পর্যন্ত গাছের শিকড় প্রবেশ করে তাকে মৃত্তিকা জলস্তর বলে। এটি অসম্পৃক্ত বা ভাডোস স্তরের সবচেয়ে উঁচু অংশ। এই অংশে মৃত্তিকা কণাগুলির গায়ে  জলের অণুগুলি একটি সূক্ষ্ম আস্তরণ আকারে বেষ্টন করে থাকে। একে আকস্মিত জল(Hygroscopic water) বলে। এই জল উদ্ভিদ ব্যবহার করে। 


              মৃত্তিকা জলস্তরের দুরকম জল অবস্থান করে - ক. উদ্গ্রাহী বা আকস্মিত জল খ.অভিকর্ষীয় জল 


2. মধ্যবর্তী ভাডোস স্তর- মৃত্তিকা জলস্তর ও নীচে কৈশিক স্তরের মধ্যবর্তী পরিবর্তনশীল স্তর হল মধ্যবর্তী ভাডোস স্তর। ভৌমজলের ওঠানামার উপরে এর গভীরতা নির্ভরশীল। 


3. কৈশিক স্তর- এটি ভাডোস স্তরের সর্বনিম্ন স্তর। মাটির রন্ধ্রগুলি সূক্ষ্ম চুলের মত নল দ্বারা যুক্ত। ইহা কৈশিক নয়। পৃষ্ঠীয়টান বেশি হলে অভিকর্ষীয় টানের প্রভাবকে অতিক্রম করে ভৌম জলপীঠ থেকে জল এই নল দিয়ে উপরে উঠে এসে মাটির কণাকে বেষ্টন করে, তাদের গায়ে লেগে থাকে। মৃত্তিকাস্থিত এই জলকে কৈশিক জল বলে। এই স্তরকে কৈশিক স্তর বলে। 


B. ক্রিয়েটিভ স্তর বা সম্পৃক্ত স্তর-

ইংরেজি Phreatic  শব্দটি গ্রীক phreate কথা থেকে আগত। যার অর্থ  "artificial well" বা কৃত্রিম কূপ। ভূ-অভ্যন্তরে অসম্পৃক্ত স্তর থেকে নীচে  অপ্রবেশ্য শিলাস্তর পর্যন্ত যে জলবাহী প্রবেশ্য শিলাস্তর স্থায়ী বা সাময়িক সম্পৃক্তবস্থায় 

থাকে তাকে সম্পৃক্ত স্তর বলে। এই স্তর থেকে ভৌমজল মনুষ্যসৃষ্ট কূপ - নলকূপে সঞ্চিত হওয়ায় একে ফ্রিয়েটিক স্তর বলে। এখানে আবদ্ধ জলকে ধৃত জল বলে। 

এই স্তর দুই প্রকার -


1. সাময়িক বা সবিরাম সম্পৃক্ত স্তর- অসম্পৃক্ত স্তরের ঠিক নীচে যে স্তরে শুধু বর্ষাকালে সাময়িকভাবে ভৌমজল পাওয়া যায় ,বৃষ্টিহীন শুষ্ক গ্রীষ্মঋতুতে শুকিয়ে যায় তাকে সবিরাম সম্পৃক্ত স্তর বলে। ঋতু পরিবর্তনের সাথে এর জলপৃষ্ঠ ও ওঠানামা করে।

 


2. স্থায়ী বা অবিরাম সম্পৃক্ত স্তর-  সবিরাম সম্পৃক্ত স্তরের নীচে, ভূপৃষ্ঠ থেকে 700- 1000 মিটার গভীরতায় যে স্তরে সারাবছর স্থায়ীভাবে ভৌমজল সঞ্চিত থাকে শুষ্ক ঋতুতেও নামে না। তাকে স্থায়ী বা অবিরাম সম্পৃক্ত স্তর বলে। 




  • ভাঁজযুক্ত শিলায় আর্টেজীয় প্রস্রবণ দেখা যায় কেন?

                   অথবা 

  • পাম্প ছাড়া আর্টেজীয় কূপে জল উঠে আসে কেন ?


1750 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের আট্রেয়ন প্রস্রবণে আর্টেজীয় কূপ প্রথম খনন করা হয়।

 আর্টেজীয় কূপ এর গঠন হলো-


1. ভাঁজযুক্ত শিলায় দুটি অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মধ্যে অধোভঙ্গের আকারে একটি প্রবেশ্য শিলাস্তর বা অ্যাকুইফার অবস্থান করে।


2. প্রবেশ্য স্তরের দুইপ্রান্ত অধোভঙ্গের মধ্যভাগ অপেক্ষা উঁচু হয়ে ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত থাকে।


3. অধোভঙ্গের দুই প্রান্তে বৃষ্টিপাত হলে জল প্রবেশ্য স্তর দিয়ে  চুঁইয়ে মধ্যস্তরে প্রবেশ করে। 


4. প্রবেশ্য স্তরের ওপর ও নীচে অপ্রবেশ্য স্তরের জন্য কোনো দিকে জল নির্গত হতে পারে না। 


5. তাই প্রবেশ্য স্তরে ভৌমজলের চাপ খুব বেশি থাকে। 


6. এই অবস্থায় অপ্রবেশ্য স্তরের মধ্য দিয়ে প্রবেশ্য স্তর পর্যন্ত কূপ খনন করলে, পাম্প ছাড়াই স্বাভাবিক চাপে ভৌমজল প্রবল বেগে ভূপৃষ্ঠে নির্গত হয়। এই প্রস্রবণকে আর্টেজীয় কূপ বলে।

 প্রবেশ্য স্তরের দুই প্রান্তে বৃষ্টি হলে এই কূপ হতে সারাবছর জল পাওয়া যায়।

 উদাহরণ- i.ভারতের আমেদাবাদের ধীর গঁওয়ে 232 মিটার গভীর আর্টেজীয় কূপ আছে।

ii. পন্ডিচেরিতে আছে। 



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Random Products